সৌদি আরবে অবৈধদের বৈধ হওয়ার নিয়ম | Rules for legalizing illegals in Saudi Arabia

Rules for legalizing illegals in Saudi Arabia
সৌদি আরবে অবৈধদের বৈধ হওয়ার নিয়ম

Rules for legalizing illegals in Saudi Arabia

আসসালামু-আলাইকুম আশা করি মহান আল্লাহর রহমতে আপনারা ভাল আছেন। আজকে যে বিষয়টি নিয়ে কথা বলব সেই বিষয়টি হলো সৌদি আরবে যারা অবৈধভাবে আছেন তাদের বৈধ হওয়ার নিয়ম। মানে একজন কর্মী যাকে কফিল হুরুফ দিয়েছ, এখন কর্মী কিভাবে তার কফিলের অনুমতি ছাড়া নতুন কোনো কফিলের কাছে কাফালা হতে পারবে এই বিষয়ে আজকে আমি আপনাদেরকে বুঝিয়ে বলব। আশা করি আপনারা পোস্টটি শেষ পর্যন্ত পড়বেন।

এখন মন্ত্রণালয় থেকে বা আমরা সংবাদ মাধ্যম থেকে যে খবরটা পেয়েছি সেখানে চারটি শর্তের কথা বলা হয়েছে বলা হয়েছে। আর এই চারটি শর্ত যদি কফিল অমান্য করে তাহলে তার কর্মী চাইলে কফিলের অনুমতি ছাড়াই হুরুফ কেটে অন্য জায়গায় কাফালা হতে পারবে। চলুন যেনে নিই সেই শর্তগুলো কি কি?

  1. কোম্পানি বা মুয়াছাছার স্ট্যাটাস
  2. কোম্পানি বা মুয়াছাছা মেয়াদ উত্তির্ন
  3. কোম্পানি বা মুয়াছাছার সিস্টেম রেড
  4. কোম্পানি বা মুয়াছাছার সিস্টেম যদি রেট

1. প্রথম যেই শর্তটা হলো যদি কোম্পানি বা মুয়াছাছার স্ট্যাটাস, মানে এখন আর সেই কোম্পানিটি বিদ্যমান নেই। অনেক কারনেই প্রতিষ্ঠান বিদ্যমান না থাকতে পারে, যেমন মনে করুন কফিল তার কোনো এক কর্মীকে বা যে কোনো সময় হুরুফ দিয়েছিল এখন তার সেই সিজিলতি জারি মক্তবালা আমেলের সিস্টেমে আর নেই। যদি এরকম হয়ে থাকে তাহলে কর্মী চাইলে কফিলের অনুমতি ছাড়া হুরুফ উঠিয়ে অন্য জায়গায় কাফালা হতে পারবে।


2. যদি মুয়াছাছা বা কোম্পানি তাখতাল-ইজরা হয়। তাখতাল-ইজরা Under The Proceduce তা হলো যদি মুয়াছাছা বা কম্পানী সিস্টেম যদি তাখতাল ইজরা ( মেয়াদ উত্তির্ন ) হয়ে যায় এবং তা যদি এখনো চালু করা না হয় তাহলে এমন অবস্থাকে তাখতাল ইজরা বলা হয়। এখন কোনো কফিলের আগের সিস্টেম যদি কোন কারণে তাখতাল-ইজরা হয়ে থাকে এবং সে যদি তার আগের সিস্টেম টিকে চালু না করে বা রিনিও না করে এবং বিহত 30 দিনের মধ্যে যদি নতুন কোনো মালাফ বা ফাইল না খুলে থাকে তবে এ অবস্থায় কর্মী চাইলে পূর্বের কফিলের অনুমতি ছাড়া অন্যত্র কাফালা হতে পারবে।


যেমন ধরুন আলবাইক একটি নতুন কোম্পানি তার অধীনে প্রধান শাখায় 5 জন আমেলা আছে, এখন যদি আল বাইকের কোম্পানি আব্দুল্লাহ সে কোনো এক কর্মীকে হুরুফ দিয়েছে, হুরুফ দেওয়ার পর সে আর দ্বিতীয় কোন শাখা খুলে নাই। 30 দিনের পরে খুলেছে কিন্তু 30 দিনের মধ্যে যদি না খুলে থাকে এমত অবস্থায় কোনো কর্মী চাইলে সে আব্দুল্লাহ বা সে কোম্পানির অনুমতি ছাড়াই অন্যত্র কাফালা হতে পারে।


3. যদি মুয়াছাছা বা কোম্পানির সিস্টেম রেড হয় এবং কফিল যদি তার 75% কর্মীর কাজের চুক্তির সঠিক নিয়ম অনুসরণ না করে। লক্ষ্য করুন তৃতীয় যে শর্তটি, তার প্রধান কথা হল সঠিক নিয়মে কাজের চুক্তি না করা। যদি কফিল কর্মীদের সাথে সঠিক নিয়মে তাদের চুক্তি না করে তবে কর্মীরা চাইলে অন্যত্র কফিলের অনুমতি ছাড়াই হুরুফ উঠিয়ে কাফালা হতে পারবে।


এখন প্রশ্ন হল কর্মীর সাথে কফিলের সঠিক কাজের চুক্তি কিভাবে বা কিভাবে করতে হয় বা মন্ত্রণালয় কিভাবে নির্দেশ করে? বর্তমানে কাজের চুক্তি সাধারণত দুই ভাবে করা হয়। আর তা হলো কিউয়া প্ল্যাটফর্ম এর মাধ্যমে অথবা গোসের এর মাধ্যমে।

যেমন ধরুন আপনি কোথাও কাফালা হয়েছিলেন বা ভবিষ্যতে কোথায় কাফালা হবেন তাহলে আপনার কফিল আপনাকে তার প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ দেওয়ার জন্য আপনাকে কিউয়া প্ল্যাটফর্ম এর মাধ্যমে তলব পাঠাবে।


তলবে যে বিষয়গুলো উল্লেখ থাকে বা করতে হয়

  • তলবে আপনার বেতন কত?
  • সপ্তাহে আপনার কয় দিন ছুটি?
  • বাৎসরিক কত দিন ছুটি আপনি পাবেন?
  • দৈনিক আপনি কত ঘন্টা ডিউটি করবেন?
  • আপনার থাকা-খাওয়ার খরচ কে বহন করবে?
  • কর্মস্থলে যাতায়াতের জন্য যানবাহন কে ব্যবস্থা করবে?

এই সকল বিষয় কিউয়ার মধ্যে উল্লেখ করতে হয়। এখন ধরুন আপনার কোম্পানির কফিলের কাছে 100 জন কর্মী আছে এখন সে যদি 75 জনের কম কর্মীদের সাথে অনলাইনে কন্টাক করে থাকে তবে কর্মী পুরাতন কফিলের অনুমতি ছাড়াই অন্যত্র কাফালা হতে পারবে।


মোট কথা হলো 75% এর উপরে যদি কফিল তার কর্মীদের সাথে অনলাইন এগ্রিমেন্ট করে থাকে তাহলে আপনি কাফালা হতে পারবেন না। আর যদি 75% এর কম হয় তাহলে এটা কফিলের ব্যর্থতা তবে চাইলে আপনি কফিলের অনুমতি ছাড়া হুরুফ কাটিয়ে অন্যত্র (অন্য জায়গায়) কাফালা হতে পারবেন।


4. কোম্পানি বা মুয়াছাছার সিস্টেম যদি রেট হয় এবং কোম্পানি বা কফিল বা মুয়াছাছা যদি নুন্যতম 80% কর্মীদের সাথে হেমায়াতুল উঝুর বা বেতন ভাতার নিয়ম না মেনে চলে তবে কর্মী চাইলে পুরাতন কফিলের এর অনুমতি ছাড়াই হুরুফ উঠিয়ে অন্যত্র কাফালা হতে পারবেন এখন প্রশ্ন হল হেমায়াতুল উঝুর বা বেতন-ভাতা সঠিক নিয়মে কিভাবে করা হয়? 

আমরা আগেই উল্লেখ করেছি আপনার বেতন কত হবে? তা নির্ধারিত হয় কিউয়া বা গোসি প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে। এখন আপনার কফিল বা কোম্পানি যদি আপনার বেতন যদি না দেয় তবে কি করনীয় এটাই হল 4 নাম্বার শর্তের আসল কথা।


এক্ষেত্রে আপনাদের কে সুরক্ষা দেবে মানব সম্পদ মন্ত্রণালয় উদাত প্ল্যাটফর্ম অর্থাৎ উদাদের মাধ্যমে আপনার বেতন এর নিশ্চয়তা সুরক্ষিত হবে। মনে করুন মন্ত্রণালয়ের নিয়ম হলো প্রতি মাসের নির্দিষ্ট তারিখে আপনার বেতন ব্যাংকের মাধ্যমে পরিশোধ করা, আপনাকে হাতে টাকা না দেওয়া, চুক্তি অনুযায়ী পূর্ণ বেতন দেওয়া, এখন আপনার কফিল বা কোম্পানি যদি আপনাকে সেই নিয়ম অনুযায়ী বেতন না দিয়ে নিয়ম ভঙ্গ করে এবং তার পরিমাণ যদি হয় 80% এর অধিক অর্থাৎ আপনি ছাড়াও আরো 80% মানুষের সাথে এরকম করছে, তাহলে আপনি চাইলে আপনার কফিলের অনুমতি ছাড়া আপনি হুরুফ উঠিয়ে নতুন কফিলের কাছে কাফালা হতে পারবেন। যদি কোনো কারণে বা যদি আপনার কোন কফিল বা মুয়াছাছা 80% এর বেশি মানুষের সাথে উদাদের মাধ্যমে চুক্তি করে থাকে তাহলে কিন্তু আপনি চাইলেও আপনার হুরুফ উঠিয়ে কফিলের অনুমতি ছাড়া অন্যত্র কাফালা হতে পারবেন না।


এখন প্রশ্ন হল আপনি কিভাবে কফিলের অনুমতি ছাড়াই হুরুফ উঠিয়ে অন্য জায়গায় কাফালা হতে পারবেন?


1. আপনাদের সর্ব প্রথম কাজ হলো একজন নতুন কফিল অথবা মুয়াছাছা খোজ করা। আপনি যখন খুঁজে পাবেন তারপরের কাজ হলো আপনার কফিল আপনার জন্য গোর ফাতিজারিয়া বরাবর একটি খেতাব লিখবে বাংলায় আমরা বলতে পারি চিঠি লিখবে বা দরখাস্ত লিখবে এবং সেখানে উল্লেখ থাকবে যে এই আমেলের হুরুফ ছিল এরকম অবস্থা ছিল আমরা পূর্বে যে সকল অবস্থাগুলো বলেছি সেগুলো বর্ণনা করবে এবং বলবে এই আমেলকে আমি আমার মুয়াছাছা অথবা কোম্পানিতে কাফালা করেন নিতে চাই এবং সেটা গোর ফাতিজারিয়া অথবা চেম্বার অফ কমার্স এর মাধ্যমে সত্যায়িত করতে হবে।


2. আপনাদের অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে যে, আপনার জন্য এটি কত নাম্বার কাফালা, এবং কাফালা করার জন্য সৌদি সরকার কতৃক ফি বা চার্জ পরিশোধ করতে হবে। 

  • যদি প্রথম বার কাফালা হয় তাহলে আপনাকে সরকারি ফান্ডে 2000 রিয়াল পরিশোধ করতে হবে।
  • যদি দ্বিতীয় বার কাফালা হয় তাহলে আপনাকে সরকারি ফান্ডে 4000 রিয়াল পরিশোধ করতে হবে।
  • যদি তৃতীয় বার কাফালা হয় তাহলে আপনাকে সরকারি ফান্ডে 6000 রিয়াল পরিশোধ করতে হবে।

আপনার কফিল যখন গোর ফাতিজারিয়া থেকে ঐ কাগজটি আনবে তখন কফিল আপনাকে যখন তলব দিবে আপনার সিস্টেমে তলবটি আসবে তলবটি যখন আপনি অ্যাক্সেপ্ট করবেন তারপর কাজ হলো আপনার ফান্ডে টান্সফারের টাকাটা থাকা। যদি আপনার ফান্ডে সেই টাকা না থাকে তাহলে কিন্তু আপনি ট্রানস্ফার হতে পারবেন না।


তারপর যেই কাজটি হলো নতুন কফিল তার সিস্টেম থেকে আপনার রুসুম বের করবে যে আপনাকে কাফালা করানোর জন্য আপনার মক্তবআল আমলের কত বছরের রুসুম বাকি। যদি দুই বছরের বাকি থাকে তাহলে একটা হিসাব হবে, যদি তিন বছরে থাকে তাহলে একটা হিসেব হবে, চার বছরের যদি থাকে তাহলে আরেকটা হিসাব হবে। এই যে রুসুম বের করবেন ধরুন আপনার পিছনের মক্তবআল আমেল আসলো 9600 রিয়াল, তাহলে কিন্তু অবশ্যই আপনাকে সর্বপ্রথম সেই টাকা পরিশোধ করতে হবে। পরিশোধ করার পরেই আপনি নতুন ভাবে কাফালা হতে পারবেন এবং আরেকটি জিনিস আপনাদের মাথায় রাখতে হবে নতুন কাফালা হওয়ার আগে আপনাদেরকে জরিমানার টাকাও কিন্তু দিতে হবে জরিমানার টাকা এর সাথে আকামা দেরি করে রিনিউ করার কারণে আপনার একটা জরিমানা আসবে। 


যদি প্রথম বার সেটা হয়ে থাকে 500 রিয়াল। দ্বিতীয় বার যদি হয়ে থাকে তাহলে 1000 রিয়াল এবং অন্যান্য যদি কোনো জরিমানা আপনাদের থাকে তাহলে সেটাও কিন্তু আপনাদেরকে পরিশোধ করতে হবে।


আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন।


তথ্য সোর্স - Bin Mishal

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
close