জ্বরের প্রাথমিক চিকিৎসা। First aid for fever

 


মৌসুম পাল্টাচ্ছে। এই গরম, তো এই বৃষ্টি। এই সময় অনেকেই আক্রান্ত হচ্ছেন জ্বরে। কিন্তু জ্বর নিয়ে আমাদের কিছু ভ্রান্ত ধারণা আছে।


গা গরম মানেই জ্বর ??? 

অনেকে গা গরম লাগা বা শরীর ম্যাজম্যাজ করাকেই জ্বর বলে থাকেন। অনেকে বলেন, আমার তো সব সময়ই গায়ে জ্বর থাকে। কেউ বলেন, জ্বর থাকে, কিন্তু থার্মোমিটারে ধরা পড়ে না! আসলে গা গরম বোধ হওয়া মানেই জ্বর নয়। শরীরের তাপমাত্রা ১০১ ডিগ্রি ফারেনহাইটের ওপরে না গেলে তাকে জ্বর বলা ঠিক নয়। জ্বরের সমাধান নিতে চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার আগে বাড়িতে থার্মোমিটারে কয়েকবার জ্বর মাপুন।


জ্বর মানেই খারাপ কিছু ??? 

যেকোনো জীবাণু বা খারাপ কিছুর বিরুদ্ধে শরীরের প্রথম প্রতিরোধ জ্বর। তাই জ্বর খারাপ কিছু নয়। অনেক ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া ও নানা ধরনের জীবাণু প্রতিনিয়ত আমাদের আক্রমণ করছে। এর বিরুদ্ধে লড়াই করার প্রথম পদক্ষেপ হচ্ছে জ্বর। তাই জ্বর নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।


জ্বর ওঠামাত্র নামিয়ে ফেলতে হবে ??? 

জ্বর বাড়া ঠিক নয়, অনেকক্ষণ থাকাও ঠিক নয়—এ ধারণা অনেকের। জ্বর ১০১ ডিগ্রির ওপরে ওঠামাত্র যেকোনো উপায়ে জ্বর নামাতে হবে, নইলে সর্বনাশ হতে পারে—এ ধারণারও কোনো ভিত্তি নেই। বেশির ভাগ জ্বর কয়েক ঘণ্টা পরপর আসে, কিছুক্ষণ থেকে আবার নেমে যায়। খুব কম জ্বরই একটানা চলতে থাকে। এটা নির্ভর করে কারণের ওপর। আর জ্বরে খারাপ লাগা ও অস্বস্তি হয় বলে জ্বর নামাতে হয়, কিছু না করলেও ক্ষতি নেই।


জ্বরের জন্য চাই আলাদা পথ্য ??? 

একসময় জ্বর হলে রোগীকে আলাদা পথ্য দেওয়া হতো। এখনো অনেকে রোগীকে স্যুপ, জাউ ইত্যাদি দিয়ে থাকেন। আসলে জ্বরের জন্য কোনো খাবার খেতে নিষেধ নেই। এমনকি ঠান্ডা খাবারও। বরং জ্বরের সময় যথেষ্ট পুষ্টিকর খাবার খাওয়া চাই। আরেকটা কথা, জ্বরের কারণে পানিশূন্যতা হয়। তাই পানি পান করতে হবে প্রচুর।


যতবার জ্বর, ততবার প্যারাসিটামল ??? 

জ্বর দিনের মধ্যে যতবারই ওঠে, ততবারই প্যারাসিটামল দিয়ে নামানোর চেষ্টা করারও দরকার নেই। মাত্রাতিরিক্ত প্যারাসিটামল ক্ষতিকর হতে পারে। অনেকের ধারণা, মুখে খাবার বড়ির মাত্রা নির্দিষ্ট থাকলেও সাপোজিটরির কোনো মাত্রা নেই, যত খুশি দেওয়া যায়। এটাও ঠিক নয়।


জ্বরের চিকিৎসায় অ্যান্টিবায়োটিক???

জ্বর মানে সংক্রমণ, আর অ্যান্টিবায়োটিক ছাড়া এর চিকিৎসা অসম্পূর্ণ—এটা হচ্ছে সবচেয়ে বড় ভুল। নানা কারণেই জ্বর আসতে পারে। এর অনেকগুলোতেই অ্যান্টিবায়োটিকের কোনো ভূমিকা নেই। যেমন ভাইরাসজনিত জ্বর, ফ্লু, অ্যালার্জিজনিত জ্বর, ফুড পয়জনিং ইত্যাদি। জ্বর হলে তার কারণ খুঁজে বের করতে হবে। কারণ অনুযায়ী চিকিৎসা নিতে হবে।


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
close